পাবনার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে নয় বছর ধরে নিখোঁজ থাকা পারভীন বেগম অবশেষে ফিরে পেলেন তার মায়ের কাছে।
২০২৫ সালের ৩১ জুলাই দুপুর দেড়টার দিকে ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে স্থানীয়রা তাকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসকরা তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়েলো ল্যাম্প স্বজন টিমের সদস্য শেখ মামুন, তানভীর ও পরিচালক আবির মোস্তফা ৩১ জুলাই রাত ১১টা ৩০ মিনিটে তাকে নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরদিন ১ আগস্ট রাত ১টা ৪৫ মিনিটে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অজ্ঞাত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
তার পরিচয় জানতে ইয়েলো ল্যাম্পের ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হলেও প্রথমদিকে কোনো সাড়া মেলে না। পরে রাজশাহী সিআইডি পুলিশের সহযোগিতায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। জানা যায়, তিনি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আত্তাব উদ্দিনের মেয়ে পারভীন বেগম।
এরপর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসানের সহযোগিতায় পারভীনের মায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। এ সময় পাশে ছিলেন মানবাধিকার কর্মী মনোয়ারা বেগমও।
পারভীনের মা জবেদা বেওয়া জানান, নয় বছর আগে তার মেয়ে নিখোঁজ হয়। এতদিন তিনি ধরে নিয়েছিলেন মেয়ে আর বেঁচে নেই। তাই হঠাৎ মেয়ে ফিরে পাওয়ায় তিনি আবেগে ভেঙে পড়েন এবং বলেন, “সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ইয়েলো ল্যাম্পের সহযোগিতায় আমি আমার মেয়েকে ফিরে পেয়েছি।”
অবশেষে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অজ্ঞাত ওয়ার্ডে এক আবেগঘন পরিবেশে পারভীনকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইয়েলো ল্যাম্পের “স্বজন প্রকল্পের” পরিচালক আবির মোস্তফা, সদস্য খন্দকার আসমাউন হোসেন আদনান, রাজশাহী ইউনিটের সদস্য রাশেদ, সোহেল, ফয়সাল ও সংগঠনের সভাপতি শহিদুল্লাহ খান উজ্জ্বল।
ইয়েলো ল্যাম্প পরিবারের পক্ষ থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ, অজ্ঞাত ওয়ার্ডের কর্মী আলেয়া খাতুন ও রাজশাহী সিআইডি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।