গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীতে মীম (২২) নামের পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে কোনাবাড়ীর আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকার ঝুট ব্যবসায়ী জুয়েল হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মীম জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার শেখ সাদী গ্রামের ইমরানের স্ত্রী। তারা কোনাবাড়ীর বায়তুল হাকি জামে মসজিদ সংলগ্ন জুয়েলের বাড়িতে স্বামী ও তিন বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
নিহতের দেবর মো. ইয়ামিন জানান, “সোমবার দুপুরে আমি, ভাই ইমরান ও ভাবী মীম একসাথে দুপুরের খাবার খেয়েছি। পরে ভাই ইমরান ঝুট গোডাউনে যায়, আমি কর্মস্থলে যাই। রাতে এসে শুনি ভাবী মারা গেছে কীভাবে বুঝতে পারছি না।
স্থানীয় মুদি দোকানদার রাজু বলেন, “আছরের সময় মীমকে দোকানের সামনে দিয়ে বাসার দিকে যেতে দেখেছি। অন্য এক প্রতিবেশী নারী জানান, “বিকেলে মীম ও তার স্বামী ইমরান দোকান থেকে ডিম নিয়ে বাসায় ফিরছিল। সন্ধ্যায় শুনি, সে মারা গেছে।
পাশের বাসার বাসিন্দা জানান, “সন্ধ্যায় গিয়ে দেখি ঘরের আড়ার সঙ্গে ফেব্রিক্সের লেবেল জাতীয় কাপড় পেঁচিয়ে ঝুলে আছে মীমের লাশ।
বাড়ির মালিক ঝুট ব্যবসায়ী জুয়েল হোসেন বলেন, “আমি ওই বাড়িতে থাকি না। খবর পেয়ে এসে দেখি পুলিশ এসেছে, মীম গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে শুনেছি।
এদিকে নিহতের ফুফু মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, “আমার ভাগনি আত্মহত্যা করেনি, ওকে ওর স্বামী ইমরান মেরে ফেলেছে। কয়েকদিন ধরেই তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিল। ইমরান মীমকে বলেছিল যেন আমার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখে।
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন মীমকে আমার বাসায় যেতে বলতাম, সে বলত যাব না, গেলে স্বামী মারবে।’ লাশের গলায় কোনও দাগ ছিল না, ঘরের দরজাও খোলা ছিল। মনে হয় ঝগড়ার এক পর্যায়ে ইমরান ওকে হত্যা করেছে।
খবর পেয়ে কোনাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোনাবাড়ী থানার এসআই তাইম খান বলেন, “মাগরিবের সময় গিয়ে দেখি গৃহবধূর লাশ আড়ার সঙ্গে কাপড় পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে। সোরতহাল শেষে লাশটি মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কোনাবাড়ী থানার ইনস্পেক্টর (তদন্ত) আসিফ ইকবাল বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।
নিহত মীমের ফুফু মমতাজ বেগম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।