খুলনার ভৈরব নদীর কাস্টমঘাট এলাকায় নোঙর করা অবস্থায় সুন্দরবন ট্যুরিস্ট জাহাজ এমভি জিলান সোমবার (৬ অক্টোবর) ভোরে ভারসাম্য হারিয়ে নদীতে ডুবে গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোর বেলায় জাহাজটি হঠাৎ করেই কাত হয়ে ধীরে ধীরে পানিতে নিমজ্জিত হয়।
এমভি জিলান একটি জনপ্রিয় সুন্দরবন ভ্রমণ জাহাজ, যা খুলনা থেকে সুন্দরবনগামী পর্যটকদের পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। জাহাজটিতে প্রায় ৩০টি কেবিন ও ৭১ জন যাত্রী ধারণের সক্ষমতা রয়েছে। প্রতিদিনের মতোই এটি কাস্টমঘাট এলাকায় নোঙর করা ছিল বলে জানা গেছে।
জাহাজটি ডুবে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যর্থতা, তলার দুর্বলতা বা নোঙর করার সময় ত্রুটি থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নদীর নাব্যতা ও জাহাজের কাঠামোগত দুর্বলতাও এমন দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
স্থানীয়রা জানান, ডুবির সময় তারা তীরে ছুটে এসে কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার করার চেষ্টা করেন, তবে ঘটনাস্থলে জাহাজ কর্তৃপক্ষের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এখন পর্যন্ত জাহাজে কোনো যাত্রী বা কর্মী ছিলেন কিনা, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি।
দুর্ঘটনার পরও জাহাজ কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এদিকে ফায়ার সার্ভিস, নৌপথ নিরাপত্তা সংস্থা ও রেসকিউ দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এই দুর্ঘটনায় জাহাজ ও পর্যটন খাত উভয়ই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সুন্দরবনগামী পর্যটকরা এ ধরনের দুর্ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি, জাহাজ ডুবে যাওয়ায় নদীর তেল ও রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে পড়লে জলজ প্রাণী ও পরিবেশেও বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়; এটি দেশের জলপরিবহন, পর্যটন নিরাপত্তা এবং তদারকি ব্যবস্থার দুর্বলতার এক বড় উদাহরণ। ঘটনাটির কারণ অনুসন্ধানে দ্রুত তদন্ত, উদ্ধার কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে তারা মনে করেন।