ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কামার গ্রামে সম্প্রতি এক ঝড়ে রাস্তার পাশের একটি বড় গাছ উপড়ে পড়ে পাশের ব্যক্তিগত জমির পুকুরে পড়ে যায়। ঘটনাটি প্রথমে সাধারণ মনে হলেও পরবর্তীতে গাছের মালিকানা নিয়ে শুরু হয় বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কামার গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় রাস্তার পাশে একটি পুরনো কাঠগাছ ছিল। গত সপ্তাহে এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে গাছটি শিকড়সহ উপড়ে গিয়ে পাশের পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। পুকুরটি এলাকারই এক বাসিন্দার ব্যক্তিগত জমির অংশ। গাছটি পড়ে যাওয়ার পর তিনি সেটি কেটে বিক্রি করেন ১৫ হাজার টাকায়।
কিন্তু ঘটনার পরদিন স্থানীয় দুই সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দাবি করেন, গাছটি আসলে সরকারি রাস্তার অংশের ওপর ছিলতাই এটি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত। সাংবাদিকদের এই বক্তব্যে এলাকায় তাৎক্ষণিকভাবে বিভ্রান্তি ও বিতর্ক দেখা দেয়।
স্থানীয়দের একাংশ সাংবাদিকদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত না হয়ে প্রতিবাদ জানায়। তাদের দাবি, গাছটি বহু বছর ধরে ওই ব্যক্তিগত পুকুরের সীমানার ভেতরে ছিল এবং এটি মালিকের জমিরই অংশ। কেউ কেউ বলেন, গাছের গোড়া ও শিকড় সবসময় পুকুরের পাড়ের ভেতরে ছিল, যা রাস্তা থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যেত।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে গাছটাকে ওই পুকুরের ভেতরেই দেখেছি। সাংবাদিকরা হয়তো ভুল বুঝেছেন বা ভুল তথ্য পেয়েছেন। সরকারি গাছ হলে এলাকাবাসীই প্রথম জানত।
ঘটনার সময় কিছুক্ষণ উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও সাবেক এক কাউন্সিলর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তার মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসিত হয় এবং সিদ্ধান্ত হয়, গাছটি যেহেতু ব্যক্তিগত জমির ভেতরেই ছিল, মালিক সেটি বিক্রি করতে পারবেন।
সাবেক কাউন্সিলর বলেন, “বিষয়টি খুব সাধারণ ছিল। কিন্তু সাংবাদিকদের দাবিতে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। আমি স্থানীয়দের বক্তব্য শুনে নিশ্চিত হয়েছি যে গাছটি জমির ভেতরেই ছিল। তাই অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি করার প্রয়োজন ছিল না।
এ ঘটনার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে। গাছের মালিকও জানান, প্রাথমিকভাবে তিনি কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন কারণ সাংবাদিকরা যখন সরকারি সম্পত্তির দাবি তোলেন, তখন তিনি ভেবেছিলেন প্রশাসনিক ঝামেলায় পড়তে পারেন। পরে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসীর দাবি, এ ধরনের ছোটখাটো বিভ্রান্তি দ্রুত সমাধানের জন্য সাংবাদিকদেরও তথ্য যাচাই করে সংবাদ প্রকাশ করা উচিত, যাতে অযথা সাধারণ মানুষ আতঙ্কে না পড়ে।